১২:২১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫

জবি শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নিয়েছে সরকার

ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট সময়ঃ ১১:৪১:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫
  • / ৩৬ বার পড়া হয়েছে।

আন্দোলনস্থলে বক্তব্য রাখেন জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম। ছবি: সমকাল

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের সব দাবি পূরণের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম এ কথা জানান। এর পর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ পানি পান করিয়ে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান।

জবি উপাচার্য বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা বাজেট বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রথম দাবির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আবাসন সংকট নিরসনে অস্থায়ী হল নির্মাণের কাজ শিগগির শুরু হবে। আর দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা হবে।’

এ ঘোষণার সময় উল্লাস প্রকাশ করেন টানা তিন দিন প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখের রাস্তায় অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীরা।

জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছ উদ্দীন বলেন, ‘চতুর্থ দাবি ছিল আমাদের ওপর হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। পুলিশ দুঃখ প্রকাশ করে সাত দিনের মধ্যে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বলেছে। বাকি দাবিগুলো সরকার মেনে নিয়েছে।’

শাটডাউন কর্মসূচি প্রত্যাহারের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা ক্যাম্পাসে ফিরে যাব। শনিবার থেকে ক্যাম্পাসের কার্যক্রম স্বাভাবিক রীতিতে চলবে। তবে দাবি পূরণে আবারও গড়িমসি করা হলে আমরা ভয়ংকর রূপে রাজপথে ফিরে আসব।’

শিক্ষার্থীদের পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙিয়ে ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা সারাদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কাজ করেছি। পরিবার হিসেবে সবাইকে নিয়ে ইউজিসি সমস্যা সমাধান করতে পারবে। আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, একসঙ্গে বসে সব সমস্যার সমাধান করব। আপনাদের সব দাবি বাস্তবায়নে আমরা কাজ করছি।’

অবশ্য দাবি পূরণের লিখিত প্রজ্ঞাপন না আসায় ছাত্র অধিকারসহ অন্তত ২০ শিক্ষার্থী অনশন ভাঙবেন না জানিয়ে যমুনা অভিমুখের রাস্তায় অবস্থান করছেন। তবে অন্যান্য ছাত্র সংগঠনসহ শিক্ষার্থীরা চলে গেছেন। ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসন বৃত্তি চালু, প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট অনুমোদন, দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ একনেক সভায় পাস ও বাস্তবায়ন দাবিতে গত মঙ্গলবার থেকে জবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেন। পরে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবি যোগ হয়।

আজ সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা যমুনার সামনের সড়কে জড়ো হন। তাদের সঙ্গে সাবেক শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে রোটেশনের মাধ্যমে ৫৬টি বাসে করে আসনে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বিকেল পৌনে ৪টার দিকে কাকরাইল মোড়ে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা গ্রুপে ভাগ হয়ে অনশনে বসেন। সাবেক-বর্তমান মিলে প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষার্থীর জবি ঐক্যের পক্ষ থেকে এক পর্যায়ে গণঅনশনের ঘোষণা দেন জবি শিক্ষক সমিতির সদস্য অধ্যাপক মনজুর মোর্শেদ ভূঁইয়া।

এদিকে, আন্দোলনে অংশ নিয়ে বিকেলে হিটস্ট্রোক করেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র মো. ইয়াসিন। বর্তমানে তিনি রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

 

ট্যাগসঃ

নিউজটি শেয়ার করুন

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

জবি শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নিয়েছে সরকার

আপডেট সময়ঃ ১১:৪১:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫

আন্দোলনস্থলে বক্তব্য রাখেন জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম। ছবি: সমকাল

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের সব দাবি পূরণের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম এ কথা জানান। এর পর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ পানি পান করিয়ে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান।

জবি উপাচার্য বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা বাজেট বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রথম দাবির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আবাসন সংকট নিরসনে অস্থায়ী হল নির্মাণের কাজ শিগগির শুরু হবে। আর দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা হবে।’

এ ঘোষণার সময় উল্লাস প্রকাশ করেন টানা তিন দিন প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখের রাস্তায় অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীরা।

জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছ উদ্দীন বলেন, ‘চতুর্থ দাবি ছিল আমাদের ওপর হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। পুলিশ দুঃখ প্রকাশ করে সাত দিনের মধ্যে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বলেছে। বাকি দাবিগুলো সরকার মেনে নিয়েছে।’

শাটডাউন কর্মসূচি প্রত্যাহারের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা ক্যাম্পাসে ফিরে যাব। শনিবার থেকে ক্যাম্পাসের কার্যক্রম স্বাভাবিক রীতিতে চলবে। তবে দাবি পূরণে আবারও গড়িমসি করা হলে আমরা ভয়ংকর রূপে রাজপথে ফিরে আসব।’

শিক্ষার্থীদের পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙিয়ে ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা সারাদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কাজ করেছি। পরিবার হিসেবে সবাইকে নিয়ে ইউজিসি সমস্যা সমাধান করতে পারবে। আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, একসঙ্গে বসে সব সমস্যার সমাধান করব। আপনাদের সব দাবি বাস্তবায়নে আমরা কাজ করছি।’

অবশ্য দাবি পূরণের লিখিত প্রজ্ঞাপন না আসায় ছাত্র অধিকারসহ অন্তত ২০ শিক্ষার্থী অনশন ভাঙবেন না জানিয়ে যমুনা অভিমুখের রাস্তায় অবস্থান করছেন। তবে অন্যান্য ছাত্র সংগঠনসহ শিক্ষার্থীরা চলে গেছেন। ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসন বৃত্তি চালু, প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট অনুমোদন, দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ একনেক সভায় পাস ও বাস্তবায়ন দাবিতে গত মঙ্গলবার থেকে জবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেন। পরে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবি যোগ হয়।

আজ সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা যমুনার সামনের সড়কে জড়ো হন। তাদের সঙ্গে সাবেক শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে রোটেশনের মাধ্যমে ৫৬টি বাসে করে আসনে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বিকেল পৌনে ৪টার দিকে কাকরাইল মোড়ে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা গ্রুপে ভাগ হয়ে অনশনে বসেন। সাবেক-বর্তমান মিলে প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষার্থীর জবি ঐক্যের পক্ষ থেকে এক পর্যায়ে গণঅনশনের ঘোষণা দেন জবি শিক্ষক সমিতির সদস্য অধ্যাপক মনজুর মোর্শেদ ভূঁইয়া।

এদিকে, আন্দোলনে অংশ নিয়ে বিকেলে হিটস্ট্রোক করেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র মো. ইয়াসিন। বর্তমানে তিনি রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।