০৭:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫

ডোনাল্ড ট্রাম্প বিবিসির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছেন

হক বার্তা ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময়ঃ ০১:৫৮:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / ৭ বার পড়া হয়েছে।

‎যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির ভাষণ সম্পাদনা করে বিকৃতভাবে উপস্থাপনের অভিযোগে বিবিসির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছেন। বিবিসির জনপ্রিয় অনুসন্ধানী অনুষ্ঠান প্যানোরামা’তে প্রচারিত একটি ডকুমেন্টারিকে কেন্দ্র করেই এই মামলা। 

‎ফ্লোরিডার একটি আদালতে দাখিল করা নথি অনুযায়ী, ট্রাম্প বিবিসির বিরুদ্ধে মানহানি এবং বাণিজ্যিক অনুশীলন সংক্রান্ত আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছেন। এই দুই অভিযোগে তিনি আলাদাভাবে ৫ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ৩.৭ বিলিয়ন পাউন্ড) করে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।

‎গত নভেম্বর মাসে বিবিসি ট্রাম্পের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে দুঃখপ্রকাশ করলেও ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবি প্রত্যাখ্যান করে। একই সঙ্গে সংস্থাটি জানায়, এই ঘটনায় মানহানির মামলার কোনো ভিত্তি নেই। ট্রাম্পের আইনজীবীরা অভিযোগ করেন, বিবিসি তার ভাষণকে ইচ্ছাকৃতভাবে, বিদ্বেষপ্রসূতভাবে এবং প্রতারণামূলকভাবে বিকৃত করেছে। এর মাধ্যমে তাকে সহিংসতায় উসকানি দেয়ার মতো একজন ব্যক্তি হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

‎মামলা দায়েরের বিষয়ে বিবিসি আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। এর আগে গত মাসে ট্রাম্প জানান, ২০২৪ সালের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে বৃটেনে প্রচারিত ওই ডকুমেন্টারির জন্য তিনি বিবিসির বিরুদ্ধে মামলা করবেন।

‎সাংবাদিকদের তিনি তখন বলেন, আমার মনে হয় আমাকে এটা করতেই হবে। তারা প্রতারণা করেছে। তারা আমার মুখ থেকে বের হওয়া শব্দ বদলে দিয়েছে।

‎২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটলে দাঙ্গার ঠিক আগে দেয়া ভাষণে ট্রাম্প জনতার উদ্দেশে বলেন, আমরা ক্যাপিটলের দিকে হাঁটতে যাব এবং আমাদের সাহসী সিনেটর ও কংগ্রেস সদস্যদের উৎসাহ দেব। এর ৫০ মিনিটেরও বেশি সময় পরে, একই ভাষণে তিনি আরও বলেন, আর আমরা লড়াই করি। আমরা প্রাণপণে লড়াই করি। কিন্তু প্যানোরামা অনুষ্ঠানে এই দুটি বক্তব্য সম্পাদনার মাধ্যমে এমনভাবে দেখানো হয় যেন ট্রাম্প একটানা বলছেন, আমরা ক্যাপিটলের দিকে হাঁটতে যাব এবং আমি তোমাদের সঙ্গে থাকব। আর আমরা লড়াই করি। আমরা প্রাণপণে লড়াই করি। বিবিসি স্বীকার করেছে, এই সম্পাদনার ফলে এমন ভুল ধারণা সৃষ্টি হয়েছে যে ট্রাম্প সরাসরি সহিংসতার ডাক দিয়েছিলেন, যা বাস্তবে তিনি ওইভাবে বলেননি।

 

‎বিবিসির এই ডকুমেন্টারি এবং ট্রাম্পের অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা চলছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই মামলাটি ভবিষ্যতে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং প্রকাশনার নৈতিকতার ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।

‎ট্রাম্পের আইনজীবীরা তাদের অভিযোগে উল্লেখ করেছেন যে, এই ধরনের সম্পাদনা একটি জনসাধারণের ব্যক্তিত্বের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে পারে এবং তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

‎বিবিসি তাদের অবস্থান পরিষ্কার করে বলেছে যে, তারা সাংবাদিকতার নীতিমালা মেনে কাজ করেছে এবং কোনো ধরনের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সম্পাদনা করেনি। এই মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ এখনও নির্ধারণ করা হয়নি, তবে উভয় পক্ষই তাদের অবস্থান ধরে রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

‎তথ্যসহায়তাঃমানবজমিন

নিউজটি শেয়ার করুন

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

ডোনাল্ড ট্রাম্প বিবিসির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছেন

আপডেট সময়ঃ ০১:৫৮:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫

‎যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির ভাষণ সম্পাদনা করে বিকৃতভাবে উপস্থাপনের অভিযোগে বিবিসির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছেন। বিবিসির জনপ্রিয় অনুসন্ধানী অনুষ্ঠান প্যানোরামা’তে প্রচারিত একটি ডকুমেন্টারিকে কেন্দ্র করেই এই মামলা। 

‎ফ্লোরিডার একটি আদালতে দাখিল করা নথি অনুযায়ী, ট্রাম্প বিবিসির বিরুদ্ধে মানহানি এবং বাণিজ্যিক অনুশীলন সংক্রান্ত আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছেন। এই দুই অভিযোগে তিনি আলাদাভাবে ৫ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ৩.৭ বিলিয়ন পাউন্ড) করে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।

‎গত নভেম্বর মাসে বিবিসি ট্রাম্পের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে দুঃখপ্রকাশ করলেও ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবি প্রত্যাখ্যান করে। একই সঙ্গে সংস্থাটি জানায়, এই ঘটনায় মানহানির মামলার কোনো ভিত্তি নেই। ট্রাম্পের আইনজীবীরা অভিযোগ করেন, বিবিসি তার ভাষণকে ইচ্ছাকৃতভাবে, বিদ্বেষপ্রসূতভাবে এবং প্রতারণামূলকভাবে বিকৃত করেছে। এর মাধ্যমে তাকে সহিংসতায় উসকানি দেয়ার মতো একজন ব্যক্তি হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

‎মামলা দায়েরের বিষয়ে বিবিসি আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। এর আগে গত মাসে ট্রাম্প জানান, ২০২৪ সালের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে বৃটেনে প্রচারিত ওই ডকুমেন্টারির জন্য তিনি বিবিসির বিরুদ্ধে মামলা করবেন।

‎সাংবাদিকদের তিনি তখন বলেন, আমার মনে হয় আমাকে এটা করতেই হবে। তারা প্রতারণা করেছে। তারা আমার মুখ থেকে বের হওয়া শব্দ বদলে দিয়েছে।

‎২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটলে দাঙ্গার ঠিক আগে দেয়া ভাষণে ট্রাম্প জনতার উদ্দেশে বলেন, আমরা ক্যাপিটলের দিকে হাঁটতে যাব এবং আমাদের সাহসী সিনেটর ও কংগ্রেস সদস্যদের উৎসাহ দেব। এর ৫০ মিনিটেরও বেশি সময় পরে, একই ভাষণে তিনি আরও বলেন, আর আমরা লড়াই করি। আমরা প্রাণপণে লড়াই করি। কিন্তু প্যানোরামা অনুষ্ঠানে এই দুটি বক্তব্য সম্পাদনার মাধ্যমে এমনভাবে দেখানো হয় যেন ট্রাম্প একটানা বলছেন, আমরা ক্যাপিটলের দিকে হাঁটতে যাব এবং আমি তোমাদের সঙ্গে থাকব। আর আমরা লড়াই করি। আমরা প্রাণপণে লড়াই করি। বিবিসি স্বীকার করেছে, এই সম্পাদনার ফলে এমন ভুল ধারণা সৃষ্টি হয়েছে যে ট্রাম্প সরাসরি সহিংসতার ডাক দিয়েছিলেন, যা বাস্তবে তিনি ওইভাবে বলেননি।

 

‎বিবিসির এই ডকুমেন্টারি এবং ট্রাম্পের অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা চলছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই মামলাটি ভবিষ্যতে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং প্রকাশনার নৈতিকতার ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।

‎ট্রাম্পের আইনজীবীরা তাদের অভিযোগে উল্লেখ করেছেন যে, এই ধরনের সম্পাদনা একটি জনসাধারণের ব্যক্তিত্বের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে পারে এবং তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

‎বিবিসি তাদের অবস্থান পরিষ্কার করে বলেছে যে, তারা সাংবাদিকতার নীতিমালা মেনে কাজ করেছে এবং কোনো ধরনের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সম্পাদনা করেনি। এই মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ এখনও নির্ধারণ করা হয়নি, তবে উভয় পক্ষই তাদের অবস্থান ধরে রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

‎তথ্যসহায়তাঃমানবজমিন