১০:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ০১ জুন ২০২৫

তিস্তার পানি বাড়ায় ভারতে জারি ‘রেড অ্যালার্ট’, বাংলাদেশেও সতর্কবার্তা

হক বার্তা ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট সময়ঃ ০৫:১২:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫
  • / ৪ বার পড়া হয়েছে।

‎ভারতের সিকিমে টানা ভারি বৃষ্টির মধ্যে তিস্তা নদীর পানি বিপজ্জনকভাবে বাড়তে থাকায় ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করেছে ভারতের আবহাওয়া দপ্তর।

‎বন্যা ও ভূমিধসের আশঙ্কায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে সিকিম রাজ্যের মাঙন, গ্যালশিং ও সোরেং জেলায়।

‎সিকিম হিমালয়ের চিতামু হ্রদ থেকে সৃষ্টি নদী তিস্তা ভারতের সীমানা পেরিয়ে নীলফামারী জেলার কালীগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ফলে তিস্তার উজানে বন্যা দেখা দিলে তার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়ে।

‎বাংলাদেশের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলেছে, রংপুর বিভাগে তিস্তার সঙ্গে ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি আগামী তিন দিন বাড়তে পারে এবং তিস্তার পানি বিপৎসীমায় প্রবাহিত হতে পারে।

‎উজানে ভারি বৃষ্টির প্রভাবে সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগেও নদনদীর পানি আগামী দুইদিন বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস এসেছে।

‎ভারতের পত্রিকা ইকনোমিক টাইমস লিখেছে, শনিবার সকালে বালুওয়াখানি, গ্যাংটক থেকে পাওয়া ‘নাওকাস্ট’ সতর্কবার্তায় সকাল ৬টা ১৫ মিনিট থেকে দুই থেকে তিন ঘণ্টা ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়।

‎গ্যাংটকের জেলা প্রশাসকের জারি করা জরুরি এক ঘোষণায় বলা হয়, “জনসাধারণকে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিয়মিত হালনাগাদ তথ্য জানাবে।”

‎স্থানীয় প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, মাঙন জেলায় রেড অ্যালার্ট জারির প্রেক্ষিতে গ্যাংটকের অন্তর্গত দিকচু থেকে সিংতাম পর্যন্ত তিস্তা নদী অববাহিকায় বন্যার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।

‎সে কারণে তিস্তা নদীর অববাহিকায় কর্মরত মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখতে গ্যাংটক জেলার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তাকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

‎জরুরি কোনো পরিস্থিতি ঘটলে জেলা নিয়ন্ত্রণ কক্ষে বা সংশ্লিষ্ট জেলা প্রধানদের সঙ্গে তাৎক্ষণিক যোগাযোগ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কর্মকর্তাদের।

‎সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগে দুই দিন নদীর পানি বাড়ার আভাস

‎উজানে ভারি বৃষ্টির প্রভাবে সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের নদীর পানি আগামী দুই দিন বাড়তে পারে বলে আভাস দিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

‎কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান বলেন, সিলেট বিভাগের নদীর পানি এখনও বাড়ছে।

‎”উজানে ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে সিলেট ও মনসিংহ বিভাগের নদীর পানি আগামাী দুই দিন বিপৎসীমা অতিক্রমের সম্ভাবনা রয়েছে। তৃতীয় দিন থেকে কমতে পারে। চট্টগ্রাম বিভাগের নদীগুলোর পানি কাল থেকে কমতে পারে।”

‎বন্যার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের সারিগোয়াইন, যাদুকাটা, ধলাই, সোমেশ্বরী ও মনু নদীর পানি আগামী দুইদিন বেড়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। এই সময় সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা ও মৌলভীবাজার জেলায় নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরির ঝুঁকি রয়েছে।

‎সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি বাড়ছে, এ পরিস্থিতি আগামী দুইদিন অব্যাহত থাকতে পারে। পরের দিন কমে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।

‎রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি আগামী তিন দিন বাড়তে পারে এবং তিস্তার পানি সতর্কসীমায় প্রবাহিত হতে পারে।

‎পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বিভাগের গোমতী, মুহুরী, ফেনী, হালদা, সাঙ্গু, মাতামুহুরী নদীর পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং পরের দুই দিন কমতে পারে।

‎গঙ্গা-পদ্মা অববাহিকায় নদীর পানি পাঁচ দিন বাড়তে পারে; তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।

‎ব্রহ্মপুত্র-যমুনা অববাহিকার নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হলেও আগামী পাঁচ দিন বাড়তে পারে। তবে বিপৎসীমার নিচেই থাকার আভাস মিলেছে।

‎সুত্র:বিডিনিউজ24

নিউজটি শেয়ার করুন

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

তিস্তার পানি বাড়ায় ভারতে জারি ‘রেড অ্যালার্ট’, বাংলাদেশেও সতর্কবার্তা

আপডেট সময়ঃ ০৫:১২:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫

‎ভারতের সিকিমে টানা ভারি বৃষ্টির মধ্যে তিস্তা নদীর পানি বিপজ্জনকভাবে বাড়তে থাকায় ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করেছে ভারতের আবহাওয়া দপ্তর।

‎বন্যা ও ভূমিধসের আশঙ্কায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে সিকিম রাজ্যের মাঙন, গ্যালশিং ও সোরেং জেলায়।

‎সিকিম হিমালয়ের চিতামু হ্রদ থেকে সৃষ্টি নদী তিস্তা ভারতের সীমানা পেরিয়ে নীলফামারী জেলার কালীগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ফলে তিস্তার উজানে বন্যা দেখা দিলে তার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়ে।

‎বাংলাদেশের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলেছে, রংপুর বিভাগে তিস্তার সঙ্গে ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি আগামী তিন দিন বাড়তে পারে এবং তিস্তার পানি বিপৎসীমায় প্রবাহিত হতে পারে।

‎উজানে ভারি বৃষ্টির প্রভাবে সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগেও নদনদীর পানি আগামী দুইদিন বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস এসেছে।

‎ভারতের পত্রিকা ইকনোমিক টাইমস লিখেছে, শনিবার সকালে বালুওয়াখানি, গ্যাংটক থেকে পাওয়া ‘নাওকাস্ট’ সতর্কবার্তায় সকাল ৬টা ১৫ মিনিট থেকে দুই থেকে তিন ঘণ্টা ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়।

‎গ্যাংটকের জেলা প্রশাসকের জারি করা জরুরি এক ঘোষণায় বলা হয়, “জনসাধারণকে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিয়মিত হালনাগাদ তথ্য জানাবে।”

‎স্থানীয় প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, মাঙন জেলায় রেড অ্যালার্ট জারির প্রেক্ষিতে গ্যাংটকের অন্তর্গত দিকচু থেকে সিংতাম পর্যন্ত তিস্তা নদী অববাহিকায় বন্যার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।

‎সে কারণে তিস্তা নদীর অববাহিকায় কর্মরত মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখতে গ্যাংটক জেলার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তাকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

‎জরুরি কোনো পরিস্থিতি ঘটলে জেলা নিয়ন্ত্রণ কক্ষে বা সংশ্লিষ্ট জেলা প্রধানদের সঙ্গে তাৎক্ষণিক যোগাযোগ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কর্মকর্তাদের।

‎সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগে দুই দিন নদীর পানি বাড়ার আভাস

‎উজানে ভারি বৃষ্টির প্রভাবে সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের নদীর পানি আগামী দুই দিন বাড়তে পারে বলে আভাস দিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

‎কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান বলেন, সিলেট বিভাগের নদীর পানি এখনও বাড়ছে।

‎”উজানে ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে সিলেট ও মনসিংহ বিভাগের নদীর পানি আগামাী দুই দিন বিপৎসীমা অতিক্রমের সম্ভাবনা রয়েছে। তৃতীয় দিন থেকে কমতে পারে। চট্টগ্রাম বিভাগের নদীগুলোর পানি কাল থেকে কমতে পারে।”

‎বন্যার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের সারিগোয়াইন, যাদুকাটা, ধলাই, সোমেশ্বরী ও মনু নদীর পানি আগামী দুইদিন বেড়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। এই সময় সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা ও মৌলভীবাজার জেলায় নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরির ঝুঁকি রয়েছে।

‎সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি বাড়ছে, এ পরিস্থিতি আগামী দুইদিন অব্যাহত থাকতে পারে। পরের দিন কমে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।

‎রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি আগামী তিন দিন বাড়তে পারে এবং তিস্তার পানি সতর্কসীমায় প্রবাহিত হতে পারে।

‎পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বিভাগের গোমতী, মুহুরী, ফেনী, হালদা, সাঙ্গু, মাতামুহুরী নদীর পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং পরের দুই দিন কমতে পারে।

‎গঙ্গা-পদ্মা অববাহিকায় নদীর পানি পাঁচ দিন বাড়তে পারে; তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।

‎ব্রহ্মপুত্র-যমুনা অববাহিকার নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হলেও আগামী পাঁচ দিন বাড়তে পারে। তবে বিপৎসীমার নিচেই থাকার আভাস মিলেছে।

‎সুত্র:বিডিনিউজ24