০২:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫

নড়াইলে প্রেমিকার বিয়ে ঠেকাতে গিয়ে জীবন গেল প্রেমিকের

হক বার্তা ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময়ঃ ০২:০৮:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫
  • / ৬ বার পড়া হয়েছে।

নড়াইলের  লোহাগড়ায় প্রেমিকার বিয়ের দিনে প্রেমিক সৈয়দ মাসুম বিল্লাহ্‌র (২০) অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। মাসুম লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের মাকড়াইল গ্রামের মৃত সৈয়দ রকিবুল ইসলামের ছেলে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লাশ দেখে প্রাথমকিভাবে ধারণা করা হচ্ছে- তাকে নির্যাতন করা হয়েছে। আর সে কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পায়।

শনিবার উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের মাকড়াইল গ্রামে মাসুমের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় এ দৃশ্য। নিহতের পরিবারের দাবি, মাসুম প্রেমিকার বিয়ে আটকাতে শুক্রবার সকালে ঢাকা থেকে লোহাগড়ায় এসেছিলেন। এরজন্য তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এদিকে খবর পেয়ে  লোহাগড়া থানা পুলিশ সদস্যরা মাসুমের মরদেহ হেফাজতে নেয়। এরপর এ মৃত্যু নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

 

স্বজনরা জানান, উপজেলার লাহুড়িয়া ইউনিয়নের এক কিশোরীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল মাসুমের। পারিবারিকভাবে মেনে না  নেয়ায় তাদের সম্পর্কে ভাটা পড়ে। এর মধ্যে গত বুধবার (৩০শে জুলাই) মাসুম এলাকা ছেড়ে ঢাকায় কাজের সন্ধানে বোনের বাসায় যায় মাসুম। পরে প্রেমিকার বিয়ের খবরে গত শুক্রবার সকালের দিকে লোহাগড়া পৌঁছান মাসুম। সকাল ৯টার দিকে চাচাতো ভাই তরিকুল  মোবাইলফোনে কল করে জানতে পারেন মাসুম লোহাগড়ায়। তরিকুল তাকে অনুরোধ করেন বাড়িতে ফেরার জন্য। এরপর পরিবারের সঙ্গে আর কোনো  যোগাযোগ হয়নি। এদিকে স্থানীয় অটোচালক সুজন গত শুক্রবার (১লা আগস্ট) বেলা ১১টার পর  গোপালগঞ্জ ও নড়াইলের সীমান্তবর্তী কাশিয়ানী এলাকার মধুমতী সেতু থেকে অচেতন অবস্থায় মাসুমকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা নেয়ার প্রস্তুতিকালে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মারা যান।

চাচা শরিফুল ইসলাম বলেন, মাসুম ঢাকা থেকে ফিরে  প্রেমিকার বিয়ে আটকানোর চেষ্টা করেছিল। এ কারণে তাকে হত্যা করা হতে পারে বলে তাদের ধারণা তার। তিনি বলেন, তাদের গ্রামের সাইফুল মোল্যার কাছে প্রেমিকার বাবা সকালে ফোন দিয়ে জানান মাসুম ঝামেলা করছে। তার ছেলেপেলেরা তাকে  পেলে খারাপ হবে। এরপর তারা মাসুমকে খুঁজতে বের হয় এলাকার মানিকগঞ্জ বাজারে গিয়ে জানতে পারেন পার্লারে প্রেমিকার সঙ্গে মাসুম দেখা করে কথা বলেছে। পরে হাসপাতাল থেকে একজন ফোন করে তার খবর জানান।

শরিফুল ইসলামের দাবি, তাকে নির্যাতন করে মুমূষর্ুু অবস্থায় ফেলে রেখে গেছে তার প্রেমিকার পরিবারের লোকজন। তার মাথাসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তার বাম হাতের একটা আঙ্গুলের নখ উপড়ে ফেলা হয়েছে। এ ঘটনায় মাসুমের প্রেমিকার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও  কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। থানার ওসি শরিফুল ইসলাম বলেন, আমরা তাকে মৃত অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে থানায় নিয়ে আসি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, তিনি দুর্ঘটনায় নিহত হন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে মৃতুর আসল কারণ জানা যাবে। পরে এ ঘটনায় যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

 

সুত্রঃমানবজমিন

নিউজটি শেয়ার করুন

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

নড়াইলে প্রেমিকার বিয়ে ঠেকাতে গিয়ে জীবন গেল প্রেমিকের

আপডেট সময়ঃ ০২:০৮:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫

নড়াইলের  লোহাগড়ায় প্রেমিকার বিয়ের দিনে প্রেমিক সৈয়দ মাসুম বিল্লাহ্‌র (২০) অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। মাসুম লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের মাকড়াইল গ্রামের মৃত সৈয়দ রকিবুল ইসলামের ছেলে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লাশ দেখে প্রাথমকিভাবে ধারণা করা হচ্ছে- তাকে নির্যাতন করা হয়েছে। আর সে কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পায়।

শনিবার উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের মাকড়াইল গ্রামে মাসুমের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় এ দৃশ্য। নিহতের পরিবারের দাবি, মাসুম প্রেমিকার বিয়ে আটকাতে শুক্রবার সকালে ঢাকা থেকে লোহাগড়ায় এসেছিলেন। এরজন্য তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এদিকে খবর পেয়ে  লোহাগড়া থানা পুলিশ সদস্যরা মাসুমের মরদেহ হেফাজতে নেয়। এরপর এ মৃত্যু নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

 

স্বজনরা জানান, উপজেলার লাহুড়িয়া ইউনিয়নের এক কিশোরীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল মাসুমের। পারিবারিকভাবে মেনে না  নেয়ায় তাদের সম্পর্কে ভাটা পড়ে। এর মধ্যে গত বুধবার (৩০শে জুলাই) মাসুম এলাকা ছেড়ে ঢাকায় কাজের সন্ধানে বোনের বাসায় যায় মাসুম। পরে প্রেমিকার বিয়ের খবরে গত শুক্রবার সকালের দিকে লোহাগড়া পৌঁছান মাসুম। সকাল ৯টার দিকে চাচাতো ভাই তরিকুল  মোবাইলফোনে কল করে জানতে পারেন মাসুম লোহাগড়ায়। তরিকুল তাকে অনুরোধ করেন বাড়িতে ফেরার জন্য। এরপর পরিবারের সঙ্গে আর কোনো  যোগাযোগ হয়নি। এদিকে স্থানীয় অটোচালক সুজন গত শুক্রবার (১লা আগস্ট) বেলা ১১টার পর  গোপালগঞ্জ ও নড়াইলের সীমান্তবর্তী কাশিয়ানী এলাকার মধুমতী সেতু থেকে অচেতন অবস্থায় মাসুমকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা নেয়ার প্রস্তুতিকালে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মারা যান।

চাচা শরিফুল ইসলাম বলেন, মাসুম ঢাকা থেকে ফিরে  প্রেমিকার বিয়ে আটকানোর চেষ্টা করেছিল। এ কারণে তাকে হত্যা করা হতে পারে বলে তাদের ধারণা তার। তিনি বলেন, তাদের গ্রামের সাইফুল মোল্যার কাছে প্রেমিকার বাবা সকালে ফোন দিয়ে জানান মাসুম ঝামেলা করছে। তার ছেলেপেলেরা তাকে  পেলে খারাপ হবে। এরপর তারা মাসুমকে খুঁজতে বের হয় এলাকার মানিকগঞ্জ বাজারে গিয়ে জানতে পারেন পার্লারে প্রেমিকার সঙ্গে মাসুম দেখা করে কথা বলেছে। পরে হাসপাতাল থেকে একজন ফোন করে তার খবর জানান।

শরিফুল ইসলামের দাবি, তাকে নির্যাতন করে মুমূষর্ুু অবস্থায় ফেলে রেখে গেছে তার প্রেমিকার পরিবারের লোকজন। তার মাথাসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তার বাম হাতের একটা আঙ্গুলের নখ উপড়ে ফেলা হয়েছে। এ ঘটনায় মাসুমের প্রেমিকার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও  কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। থানার ওসি শরিফুল ইসলাম বলেন, আমরা তাকে মৃত অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে থানায় নিয়ে আসি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, তিনি দুর্ঘটনায় নিহত হন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে মৃতুর আসল কারণ জানা যাবে। পরে এ ঘটনায় যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

 

সুত্রঃমানবজমিন