১০:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫

মালয়েশিয়াগামী কর্মীদের থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়: ৬০ রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

হক বার্তা ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময়ঃ ০৬:২৯:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / ২০ বার পড়া হয়েছে।

‎মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর প্রক্রিয়ায় চুক্তি লঙ্ঘন ও নিয়মবহির্ভূত অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগে ৬০টি রিক্রুটিং এজেন্সি (ওভারসিজ কোম্পানি) এবং সেগুলোর স্বত্বাধিকারী, চেয়ারম্যান ও পরিচালকসহ মোট ১২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

‎অভিযুক্তরা সরকারি বিধি ভঙ্গ করে মালয়েশিয়া গমনেচ্ছু শ্রমিকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৪ হাজার ৫৪৫ কোটি ২০ লাখ ৮২ হাজার ৫০০ টাকা আদায় করে তা আত্মসাৎ ও অর্থ পাচার করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেছে দুদক।

‎আজ বুধবার দুদক প্রধান কার্যালয়ে এক নিয়মিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।

‎দুদক জানায়, অভিযুক্তরা বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিসের (বায়রা) বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে পরস্পর যোগসাজশে সিন্ডিকেট গঠন করেন। তারা বায়রার রেজিস্ট্রেশন শর্ত ভঙ্গ করে, সরকার নির্ধারিত ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকা ব্যয়ের বহুগুণ বেশি অর্থ শ্রমিকদের কাছ থেকে আদায় করেন এবং মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে হওয়া দ্বিপাক্ষিক চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করেন।

‎তদন্ত সূত্রে জানা যায়, চুক্তির আওতাভুক্ত নির্ধারিত সেবা-বাছাই, ফি গ্রহণ ও অর্থসংক্রান্ত নিয়ম এড়িয়ে কর্মীদের কাছ থেকে পাসপোর্ট, মেডিকেল পরীক্ষা ও অন্যান্য পর্যায়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হয়। একই সঙ্গে রাজনৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রভাব খাটিয়ে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে অবৈধ সুবিধা দেওয়া হয়। এভাবে অবৈধভাবে সংগৃহীত অর্থ হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে অর্থপাচারও হয়েছে বলে দুদক জানায়।

‎অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১২০(বি) ১৬১/১৬২/১৬৩/১৬৪/১৬৫(ক)/৪২০/৪০৯/১০৯ ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

‎এর আগে ৪০টি ওভারসিজ রিক্রুটিং কোম্পানির বিরুদ্ধে পৃথক ৪০টি মামলায় মোট ১০৮ জনকে আসামি করা হয়েছিল। এসব মামলায় আত্মসাতের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৪৩৮ কোটি ৯৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা। মামলাগুলো বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে।

‎দুদকের এই পদক্ষেপের ফলে সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর কার্যক্রমে নজরদারি আরও জোরদার হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে প্রবাসী শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

‎এদিকে, মামলার তদন্ত কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানানো হয়েছে। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে।

‎একই সঙ্গে, প্রবাসী শ্রমিকদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে, যাতে তারা প্রতারণার শিকার না হন এবং তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন থাকতে পারেন।

‎তথ্যসহায়তাঃবাসস

নিউজটি শেয়ার করুন

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

মালয়েশিয়াগামী কর্মীদের থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়: ৬০ রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

আপডেট সময়ঃ ০৬:২৯:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫

‎মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর প্রক্রিয়ায় চুক্তি লঙ্ঘন ও নিয়মবহির্ভূত অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগে ৬০টি রিক্রুটিং এজেন্সি (ওভারসিজ কোম্পানি) এবং সেগুলোর স্বত্বাধিকারী, চেয়ারম্যান ও পরিচালকসহ মোট ১২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

‎অভিযুক্তরা সরকারি বিধি ভঙ্গ করে মালয়েশিয়া গমনেচ্ছু শ্রমিকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৪ হাজার ৫৪৫ কোটি ২০ লাখ ৮২ হাজার ৫০০ টাকা আদায় করে তা আত্মসাৎ ও অর্থ পাচার করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেছে দুদক।

‎আজ বুধবার দুদক প্রধান কার্যালয়ে এক নিয়মিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।

‎দুদক জানায়, অভিযুক্তরা বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিসের (বায়রা) বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে পরস্পর যোগসাজশে সিন্ডিকেট গঠন করেন। তারা বায়রার রেজিস্ট্রেশন শর্ত ভঙ্গ করে, সরকার নির্ধারিত ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকা ব্যয়ের বহুগুণ বেশি অর্থ শ্রমিকদের কাছ থেকে আদায় করেন এবং মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে হওয়া দ্বিপাক্ষিক চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করেন।

‎তদন্ত সূত্রে জানা যায়, চুক্তির আওতাভুক্ত নির্ধারিত সেবা-বাছাই, ফি গ্রহণ ও অর্থসংক্রান্ত নিয়ম এড়িয়ে কর্মীদের কাছ থেকে পাসপোর্ট, মেডিকেল পরীক্ষা ও অন্যান্য পর্যায়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হয়। একই সঙ্গে রাজনৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রভাব খাটিয়ে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে অবৈধ সুবিধা দেওয়া হয়। এভাবে অবৈধভাবে সংগৃহীত অর্থ হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে অর্থপাচারও হয়েছে বলে দুদক জানায়।

‎অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১২০(বি) ১৬১/১৬২/১৬৩/১৬৪/১৬৫(ক)/৪২০/৪০৯/১০৯ ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

‎এর আগে ৪০টি ওভারসিজ রিক্রুটিং কোম্পানির বিরুদ্ধে পৃথক ৪০টি মামলায় মোট ১০৮ জনকে আসামি করা হয়েছিল। এসব মামলায় আত্মসাতের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৪৩৮ কোটি ৯৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা। মামলাগুলো বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে।

‎দুদকের এই পদক্ষেপের ফলে সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর কার্যক্রমে নজরদারি আরও জোরদার হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে প্রবাসী শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

‎এদিকে, মামলার তদন্ত কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানানো হয়েছে। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে।

‎একই সঙ্গে, প্রবাসী শ্রমিকদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে, যাতে তারা প্রতারণার শিকার না হন এবং তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন থাকতে পারেন।

‎তথ্যসহায়তাঃবাসস