০৪:০২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫

সিলেট ও সুনামগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে বিএসএফের পুশ-ইন, আটক ৩৯ বাংলাদেশি

আলী আহমদ দুলাল
  • আপডেট সময়ঃ ১০:১৬:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫
  • / ৮৫ বার পড়া হয়েছে।

ছবি : সংগৃহীত

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:

সিলেট ও সুনামগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) পুশ-ইনের মাধ্যমে ৩৯ জন বাংলাদেশিকে বাংলাদেশ ভূখণ্ডে ঢুকিয়ে দিয়েছে। সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে চলতি মাসের শুরু থেকে এ পর্যন্ত এ সংখ্যা ৩৯ জনে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

বিজিবি সূত্র জানায়, সুনামগঞ্জের ছাতকের নোয়াকোট সীমান্ত, দোয়ারাবাজারের লাউড়েরগড় এবং সিলেটের জকিগঞ্জ ও কোম্পানীগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে সম্প্রতি রাতের আঁধারে নারী, পুরুষ ও শিশুসহ কয়েকটি দলকে ভারত থেকে ঠেলে দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৩২ জন মোকামপুঞ্জি সীমান্ত দিয়ে, ২০ জন মিনাটিলা ও ১৪ জন জকিগঞ্জ সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে প্রবেশ করে। বিজিবির সদস্যরা তাদের আটক করে স্থানীয় থানায় হস্তান্তর করে।

বিজিবির ৫২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মেহেদী হাসান বলেন, “বিএসএফ কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই নির্জন ও অরক্ষিত সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশিদের ঠেলে পাঠাচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক আইন ও চুক্তির লঙ্ঘন। আমরা প্রতিটি ঘটনায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে পতাকা বৈঠক চেয়ে চিঠি দিয়েছি।”

আটককৃত ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকেই জানান, তারা অবৈধভাবে ভারতে গিয়েছিলেন কাজের সন্ধানে। অনেকে দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিমবঙ্গে অবস্থান করছিলেন এবং সেখানে গ্রেপ্তার হয়ে জেল খেটেছেন। পরে সাজার মেয়াদ শেষে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কোনো কাগজপত্র ছাড়াই তাদের সীমান্তে এনে ফেলে যায়।

মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দাবি, এ ধরনের আচরণ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তির পরিপন্থী। সুনামগঞ্জের মানবাধিকার সংগঠন ‘সচেতন নাগরিক পরিষদ’-এর সভাপতি অ্যাডভোকেট শহীদুল ইসলাম শাহীন বলেন, “ভারত এভাবে পুশ-ইন করতে পারে না। এটি সম্পূর্ণ বেআইনি ও অমানবিক। দুই দেশের সরকারের উচিত এ বিষয়ে দ্রুত আলোচনায় বসা।”

স্থানীয়দের মতে, হঠাৎ করে এইসব পুশ-ইনকৃত লোকজন সীমান্ত এলাকায় ঢুকে পড়ায় নিরাপত্তা ও জনমনে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে রাতের বেলায় টহল জোরদার না থাকায় সীমান্ত পাড়ে ভীতি বাড়ছে।

প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছরে বিএসএফ কর্তৃক পুশ-ইনের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া না হলে সীমান্তে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

সিলেট ও সুনামগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে বিএসএফের পুশ-ইন, আটক ৩৯ বাংলাদেশি

আপডেট সময়ঃ ১০:১৬:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫

ছবি : সংগৃহীত

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:

সিলেট ও সুনামগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) পুশ-ইনের মাধ্যমে ৩৯ জন বাংলাদেশিকে বাংলাদেশ ভূখণ্ডে ঢুকিয়ে দিয়েছে। সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে চলতি মাসের শুরু থেকে এ পর্যন্ত এ সংখ্যা ৩৯ জনে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

বিজিবি সূত্র জানায়, সুনামগঞ্জের ছাতকের নোয়াকোট সীমান্ত, দোয়ারাবাজারের লাউড়েরগড় এবং সিলেটের জকিগঞ্জ ও কোম্পানীগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে সম্প্রতি রাতের আঁধারে নারী, পুরুষ ও শিশুসহ কয়েকটি দলকে ভারত থেকে ঠেলে দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৩২ জন মোকামপুঞ্জি সীমান্ত দিয়ে, ২০ জন মিনাটিলা ও ১৪ জন জকিগঞ্জ সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে প্রবেশ করে। বিজিবির সদস্যরা তাদের আটক করে স্থানীয় থানায় হস্তান্তর করে।

বিজিবির ৫২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মেহেদী হাসান বলেন, “বিএসএফ কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই নির্জন ও অরক্ষিত সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশিদের ঠেলে পাঠাচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক আইন ও চুক্তির লঙ্ঘন। আমরা প্রতিটি ঘটনায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে পতাকা বৈঠক চেয়ে চিঠি দিয়েছি।”

আটককৃত ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকেই জানান, তারা অবৈধভাবে ভারতে গিয়েছিলেন কাজের সন্ধানে। অনেকে দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিমবঙ্গে অবস্থান করছিলেন এবং সেখানে গ্রেপ্তার হয়ে জেল খেটেছেন। পরে সাজার মেয়াদ শেষে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কোনো কাগজপত্র ছাড়াই তাদের সীমান্তে এনে ফেলে যায়।

মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দাবি, এ ধরনের আচরণ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তির পরিপন্থী। সুনামগঞ্জের মানবাধিকার সংগঠন ‘সচেতন নাগরিক পরিষদ’-এর সভাপতি অ্যাডভোকেট শহীদুল ইসলাম শাহীন বলেন, “ভারত এভাবে পুশ-ইন করতে পারে না। এটি সম্পূর্ণ বেআইনি ও অমানবিক। দুই দেশের সরকারের উচিত এ বিষয়ে দ্রুত আলোচনায় বসা।”

স্থানীয়দের মতে, হঠাৎ করে এইসব পুশ-ইনকৃত লোকজন সীমান্ত এলাকায় ঢুকে পড়ায় নিরাপত্তা ও জনমনে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে রাতের বেলায় টহল জোরদার না থাকায় সীমান্ত পাড়ে ভীতি বাড়ছে।

প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছরে বিএসএফ কর্তৃক পুশ-ইনের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া না হলে সীমান্তে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে।