মধ্যরাতে আটক সিপিবি নেতাকে পুরোনো মামলায় গ্রেপ্তার দেখাল সিলেট পুলিশ
- আপডেট সময়ঃ ১১:১০:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ নভেম্বর ২০২৫
- / ২৮ বার পড়া হয়েছে।
সিলেটে মধ্যরাতে আটকের পর বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) নেতা অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন সুমনকে পুরনো দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
শনিবার (১ নভেম্বর) সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের জালালাবাদ থানা পুলিশ তাকে কারাগারে পাঠায়। এসএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি, মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি সংবাদিকদের বলেন, নগরীতে ব্যাটারি রিকশা চালকদের আন্দোলনের নামে উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড এবং সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) গেট ও সিএনজি অটোরিকশা ভাঙচুরের ঘটনায় সুমনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। এ কারণেই তাকে আটক করে দ্রুত বিচার আইনের দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) রাত ১২টার দিকে নগরের আখালিয়া কালীবাড়ি এলাকার বাসা থেকে সিপিবি নেতা সুমনকে মহানগরের জালালাবাদ থানার পুলিশ আটক করে। তিনি সিলেট নগরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ ১১ দফা দাবিতে গত মঙ্গলবার আয়োজিত আন্দোলন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন।
আনোয়ার হোসেন সুমন সিপিবি সিলেট জেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমানে সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য। পেশায় তিনি আইনজীবী।

সিপিবি নেতা সুমনের রাজনৈতিক সহকর্মীদের অভিযোগ, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালকদের আন্দোলনে উপস্থিত থাকার কারণেই সিলেটের প্রগতিশীল রাজনীতির পরিচিত এই মুখকে পুলিশ বিনা অভিযোগে তুলে নিয়ে গেছে। রাত ১২টা থেকে সাড়ে ১২টার মধ্যে জালালাবাদ থানার পুলিশ তাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায়।
এর আগে গত মঙ্গলবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নগরের চৌহাট্টা-জিন্দাবাজার সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালকেরা। এতে আনোয়ার হোসেন সুমনসহ কয়েকজন রাজনীতিক অংশ নেন। ওই দিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চৌহাট্টা এলাকার পার্শ্ববর্তী সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে সিলেট জেলা রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের উদ্যোগে একই দাবিতে শ্রমিক সমাবেশ হয়।
বিক্ষোভের এক পর্যায়ে আনোয়ার হোসেনসহ আন্দোলনকারীদের একটি প্রতিনিধিদল মহানগরের পুলিশ কমিশনার আবদুল কুদ্দুছ চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। এরপর ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ ১১ দফা দাবি জনিয়ে আগামীকাল রোববার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে আন্দোলন স্থগিত করেন শ্রমিকেরা। ওই আলটিমেটাম শেষ হওয়ার এক দিন আগে আনোয়ার হোসেনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
পুলিশের অভিযোগ, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালকদের আন্দোলনে তৃতীয় একটি পক্ষ ইন্ধন দিচ্ছে। তবে কারা এই তৃতীয় পক্ষ, এটা পুলিশ জানায়নি। শনিবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করে এসএমপির পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরী প্রেস ব্রিফিং করে অভিযোগ করেন, ব্যাটারি রিকশা শ্রমিকদের আন্দোলনে তৃতীয় পক্ষ ইন্ধন দিচ্ছে। তিনি বলেন, পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে সংঘাতের আশঙ্কায় ব্যাটারি রিকশা শ্রমিকদের রোববারের কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে সিলেট মহানগরীতে ব্যাটারি চালিত রিকশা চলাচল বন্ধে অভিযান শুরু করে পুলিশ। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের উদ্যোগে পরিচালিত এই অভিযানে বহু রিকশা জব্দ ও একাধিক চার্জিং পয়েন্টের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এরপর থেকে নগরে ব্যাটারি রিকশা চলতে দেওয়া হচ্ছে না।
সিপিবি নেতা সুমনের গ্রেপ্তারের আগে ব্যাটারি রিকশা চালকদের আন্দোলনে সম্পৃক্ততার কারণে গত ২৭ সেপ্টেম্বর সিলেট নগরের আম্বরখানা এলাকার বাসদ কার্যালয় থেকে আলোচনার কথা বলে বাসদ সিলেট জেলার আহ্বায়ক আবু জাফর ও সদস্যসচিব প্রণব জ্যোতি পালকে আটক করে পুলিশ। পরে তাদেরও সিসিকের গেট ভাঙচুর ও সিএনজি অটোরিকশা ভাঙচুরের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছিল। তবে তারা দুজন এখন জামিনে মুক্ত আছেন।
সুত্রঃসুনামগঞ্জেরখবর





















