০৯:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫

চাহিদামতো টাকা না দেয়ায় এক বছরেও মেলেনি মৃত্যু সনদ

হক বার্তা ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময়ঃ ০৩:০৯:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫
  • / ৩ বার পড়া হয়েছে।

সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে পিতার মৃত্যু সনদ পেতে বছর খানেক ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে হেঁটেও সনদ না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন এক নারী। ওই নারীর নাম মোমিনা আক্তার। তিনি দিরাই উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের কাজুয়াবাদ গ্রামের বাসিন্দা।

নিরুপায় হয়ে ভুক্তভোগী নারী ইউএনও বরাবর অভিযোগ করতে চাইলে, রাজানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সিলেট জেলা যুবলীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক জহিরুল ইসলাম জুয়েল মোবাইল ফোনে তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল ও হুমকি দেন। ওই ফোনালাপের একটি ভিডিও রেকর্ড এ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।

 

মোমিনা আক্তার জানান, তার পিতা কুদ্দুছ মিয়া প্রায় দেড় বছর আগে মারা যান। পিতার মৃত্যু সনদের জন্য চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে, তিনি দবির মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন (দবির মিয়া চেয়ারম্যানের নিকটাত্মীয় ও ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা)। দবির মিয়া মৃত্যু সনদের জন্য দুই হাজার টাকা ও জাতীয় পরিচয়পত্র জমা দিতে বলেন। টাকা না দেয়ায় মাসের পর মাস অতিবাহিত হলেও পিতার মৃত্যু সনদ পাননি ওই নারী। একপর্যায়ে চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানালে দবির মিয়ার কথাই তার কথা বলে জানান চেয়ারম্যান।

মোমিনা আক্তার বলেন, কয়েকদিন আগে অফিসে যাই এবং দবির মিয়াকে অনুরোধ করি। তিনি টাকা ছাড়া সনদ দেয়া যাবে না জানালে, আমি ইউএনও’র কাছে অভিযোগ করার কথা বলে চলে আসি। এরপর চেয়ারম্যান জুয়েল আমাকে তার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর থেকে ফোন দিয়ে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করে এবং অভিযোগ না করতে হুমকি দেয়। আমি গরিব মানুষ, ভয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম জুয়েল বলেন, ওই মহিলাকে বলেছি অফিসে যেতে। কিন্তু অফিসে যাবে না। সে যেখানে বলে সেখানে পাঠিয়ে দিতে হবে। এ নিয়ে আমাকে গালাগালি করেছে। ফোনালাপের ভিডিও সম্পর্কে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান বলেন, উনি কোথা থেকে ভিডিও তৈরি করেছে, তাতো আমি বলতে পারবো না। এখন তো এসব ভিডিও বানানো যায়।

 

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সঞ্জীব সরকার বলেন, চেয়ারম্যানকে বলে দিয়েছি, ওই নারী যাতে প্রাপ্য সেবা থেকে বঞ্চিত না হয়। দিরাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মোমিনা আক্তার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

 

সুত্র:মানবজমিন

নিউজটি শেয়ার করুন

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

চাহিদামতো টাকা না দেয়ায় এক বছরেও মেলেনি মৃত্যু সনদ

আপডেট সময়ঃ ০৩:০৯:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫

সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে পিতার মৃত্যু সনদ পেতে বছর খানেক ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে হেঁটেও সনদ না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন এক নারী। ওই নারীর নাম মোমিনা আক্তার। তিনি দিরাই উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের কাজুয়াবাদ গ্রামের বাসিন্দা।

নিরুপায় হয়ে ভুক্তভোগী নারী ইউএনও বরাবর অভিযোগ করতে চাইলে, রাজানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সিলেট জেলা যুবলীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক জহিরুল ইসলাম জুয়েল মোবাইল ফোনে তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল ও হুমকি দেন। ওই ফোনালাপের একটি ভিডিও রেকর্ড এ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।

 

মোমিনা আক্তার জানান, তার পিতা কুদ্দুছ মিয়া প্রায় দেড় বছর আগে মারা যান। পিতার মৃত্যু সনদের জন্য চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে, তিনি দবির মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন (দবির মিয়া চেয়ারম্যানের নিকটাত্মীয় ও ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা)। দবির মিয়া মৃত্যু সনদের জন্য দুই হাজার টাকা ও জাতীয় পরিচয়পত্র জমা দিতে বলেন। টাকা না দেয়ায় মাসের পর মাস অতিবাহিত হলেও পিতার মৃত্যু সনদ পাননি ওই নারী। একপর্যায়ে চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানালে দবির মিয়ার কথাই তার কথা বলে জানান চেয়ারম্যান।

মোমিনা আক্তার বলেন, কয়েকদিন আগে অফিসে যাই এবং দবির মিয়াকে অনুরোধ করি। তিনি টাকা ছাড়া সনদ দেয়া যাবে না জানালে, আমি ইউএনও’র কাছে অভিযোগ করার কথা বলে চলে আসি। এরপর চেয়ারম্যান জুয়েল আমাকে তার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর থেকে ফোন দিয়ে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করে এবং অভিযোগ না করতে হুমকি দেয়। আমি গরিব মানুষ, ভয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম জুয়েল বলেন, ওই মহিলাকে বলেছি অফিসে যেতে। কিন্তু অফিসে যাবে না। সে যেখানে বলে সেখানে পাঠিয়ে দিতে হবে। এ নিয়ে আমাকে গালাগালি করেছে। ফোনালাপের ভিডিও সম্পর্কে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান বলেন, উনি কোথা থেকে ভিডিও তৈরি করেছে, তাতো আমি বলতে পারবো না। এখন তো এসব ভিডিও বানানো যায়।

 

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সঞ্জীব সরকার বলেন, চেয়ারম্যানকে বলে দিয়েছি, ওই নারী যাতে প্রাপ্য সেবা থেকে বঞ্চিত না হয়। দিরাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মোমিনা আক্তার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

 

সুত্র:মানবজমিন