০৪:২১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫

রাজধানীতে অপহরণের পর নগ্ন ভিডিও পাঠিয়ে মুক্তিপণ দাবি, প্রায় দেড় কোটি টাকাসহ কলেজছাত্রীকে উদ্ধার

হক বার্তা ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট সময়ঃ ০৯:৪৮:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫
  • / ১১ বার পড়া হয়েছে।

‎ঢাকার এক কলেজছাত্রীকে তাঁর পূর্বপরিচিত মাসুম পারভেজ নামের এক যুবক গত সোমবার উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের একটি ফ্ল্যাটে ডেকে নেন। এরপর সহযোগীদের নিয়ে মেয়েটিকে সেখানে আটকে রেখে নগ্ন ভিডিও করেন ও ছবি তোলেন। পরে অপহরণকারীরা ওই ভিডিও তাঁর মায়ের কাছে পাঠিয়ে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ চান।

‎কলেজছাত্রীর মা ঘটনাটি উত্তরা পশ্চিম থানায় জানালে পুলিশ গত বুধবার বিকেলে ওই ফ্ল্যাটে গিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জড়িত মাসুম পারভেজসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় প্রায় দেড় কোটি টাকা।

‎গত বুধবার কলেজছাত্রীকে উদ্ধার করা হলেও আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপির) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

‎ডিএমপির উত্তরা বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, অভিযানে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে শুধু ওই ছাত্রীই নন, এখানে বায়িং হাউসের আড়ালে মেয়েদের অপহরণের পর নগ্ন করে ভিডিও এবং ছবি তুলে তাঁদের পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করে আসছিল চক্রটি। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় মুক্তিপণ বাবদ আদায় করা এক কোটি ৪১ লাখ টাকা, ৬০টি ইয়াবা বড়ি, দুটি সিসি (ক্লোজড সার্কিট) ক্যামেরা এবং তিনটি মুঠোফোন ফোন উদ্ধার করা হয়।

‎গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মো. মাসুম পারভেজ (৩৮), মো. সোলাইমান হোসেন (৩৮), শফিকুল ইসলাম সৌরভ (২৭), মোছা. মায়া (২৫) ও মোছা. রুলি খানম (১৯)।

‎কলেজছাত্রীকে উদ্ধার অভিযান তত্ত্বাবধান করেন ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার মুহিদুল ইসলাম। তিনি আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, অপহৃত মেয়েটি রাজধানীর একটি কলেজে পড়েন।

‎গত সোমবার বিকেলে তাঁকে উত্তরার ১১ নম্বরে সেক্টরের ১০/বি সড়কের একটি ভবনের দোতলার একটি ফ্ল্যাটে ডেকে নিয়ে যান তার পূর্বপরিচিত মাসুম পারভেজ। এরপর সেখানে আটকে রেখে মেয়েটির নগ্ন ভিডিও ও ছবি তোলা হয়। পরদিন মঙ্গলবার গভীর রাতে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা ওই ভিডিও কলেজছাত্রীর মায়ের মুঠোফোনে পাঠিয়ে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখান এবং মেয়ের জন্য ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ চান।

‎এরপর কলেজছাত্রীর মা ঘটনাটি পুলিশকে জানান উল্লেখ করে তিনি বলেন, উত্তরা পশ্চিম থানার একদল পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অপহরণকারী চক্রটির অবস্থান শনাক্ত করে। বুধবার বিকেলে পুলিশ উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের ওই ফ্ল্যাটে গিয়ে কলেজছাত্রীকে উদ্ধার করে।

‎পুলিশ কর্মকর্তা মুহিদুল ইসলাম বলেন, এখানে অপহৃতদের মাদক সেবনে বাধ্য করা হতো। এ ছাড়া বায়িং হাউসে নিয়োগ দেওয়া মেয়েদের দিয়েও আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও করতেন চক্রের সদস্যরা। এসব ভিডিও দিয়ে তাদের ‘ব্ল্যাকমেল’ করা হতো।

‎এ ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইন, মাদকদ্রব্য ও পর্নোগ্রাফি আইনে পৃথক তিনটি মামলা করা হয়েছে। গ্রেপ্তার সবাইকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তারা বায়িং হাউসের কর্মী। অপহরণ চক্রে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

‎সুত্র:প্রথমআলো

নিউজটি শেয়ার করুন

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

রাজধানীতে অপহরণের পর নগ্ন ভিডিও পাঠিয়ে মুক্তিপণ দাবি, প্রায় দেড় কোটি টাকাসহ কলেজছাত্রীকে উদ্ধার

আপডেট সময়ঃ ০৯:৪৮:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫

‎ঢাকার এক কলেজছাত্রীকে তাঁর পূর্বপরিচিত মাসুম পারভেজ নামের এক যুবক গত সোমবার উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের একটি ফ্ল্যাটে ডেকে নেন। এরপর সহযোগীদের নিয়ে মেয়েটিকে সেখানে আটকে রেখে নগ্ন ভিডিও করেন ও ছবি তোলেন। পরে অপহরণকারীরা ওই ভিডিও তাঁর মায়ের কাছে পাঠিয়ে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ চান।

‎কলেজছাত্রীর মা ঘটনাটি উত্তরা পশ্চিম থানায় জানালে পুলিশ গত বুধবার বিকেলে ওই ফ্ল্যাটে গিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জড়িত মাসুম পারভেজসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় প্রায় দেড় কোটি টাকা।

‎গত বুধবার কলেজছাত্রীকে উদ্ধার করা হলেও আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপির) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

‎ডিএমপির উত্তরা বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, অভিযানে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে শুধু ওই ছাত্রীই নন, এখানে বায়িং হাউসের আড়ালে মেয়েদের অপহরণের পর নগ্ন করে ভিডিও এবং ছবি তুলে তাঁদের পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করে আসছিল চক্রটি। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় মুক্তিপণ বাবদ আদায় করা এক কোটি ৪১ লাখ টাকা, ৬০টি ইয়াবা বড়ি, দুটি সিসি (ক্লোজড সার্কিট) ক্যামেরা এবং তিনটি মুঠোফোন ফোন উদ্ধার করা হয়।

‎গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মো. মাসুম পারভেজ (৩৮), মো. সোলাইমান হোসেন (৩৮), শফিকুল ইসলাম সৌরভ (২৭), মোছা. মায়া (২৫) ও মোছা. রুলি খানম (১৯)।

‎কলেজছাত্রীকে উদ্ধার অভিযান তত্ত্বাবধান করেন ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার মুহিদুল ইসলাম। তিনি আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, অপহৃত মেয়েটি রাজধানীর একটি কলেজে পড়েন।

‎গত সোমবার বিকেলে তাঁকে উত্তরার ১১ নম্বরে সেক্টরের ১০/বি সড়কের একটি ভবনের দোতলার একটি ফ্ল্যাটে ডেকে নিয়ে যান তার পূর্বপরিচিত মাসুম পারভেজ। এরপর সেখানে আটকে রেখে মেয়েটির নগ্ন ভিডিও ও ছবি তোলা হয়। পরদিন মঙ্গলবার গভীর রাতে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা ওই ভিডিও কলেজছাত্রীর মায়ের মুঠোফোনে পাঠিয়ে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখান এবং মেয়ের জন্য ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ চান।

‎এরপর কলেজছাত্রীর মা ঘটনাটি পুলিশকে জানান উল্লেখ করে তিনি বলেন, উত্তরা পশ্চিম থানার একদল পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অপহরণকারী চক্রটির অবস্থান শনাক্ত করে। বুধবার বিকেলে পুলিশ উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের ওই ফ্ল্যাটে গিয়ে কলেজছাত্রীকে উদ্ধার করে।

‎পুলিশ কর্মকর্তা মুহিদুল ইসলাম বলেন, এখানে অপহৃতদের মাদক সেবনে বাধ্য করা হতো। এ ছাড়া বায়িং হাউসে নিয়োগ দেওয়া মেয়েদের দিয়েও আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও করতেন চক্রের সদস্যরা। এসব ভিডিও দিয়ে তাদের ‘ব্ল্যাকমেল’ করা হতো।

‎এ ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইন, মাদকদ্রব্য ও পর্নোগ্রাফি আইনে পৃথক তিনটি মামলা করা হয়েছে। গ্রেপ্তার সবাইকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তারা বায়িং হাউসের কর্মী। অপহরণ চক্রে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

‎সুত্র:প্রথমআলো