০২:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫

বাংলাদেশি পন্য আমদানীতে ভারতীয় স্থলবন্দরে নিষেধাজ্ঞা

হক বার্তা ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময়ঃ ০১:৩৮:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫
  • / ২১ বার পড়া হয়েছে।

তৈরি পোশাকসহ বাংলাদেশি বিভিন্ন পণ্য স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি নিষিদ্ধ করেছে ভারত সরকার। গত মাসে ভারতের সুনির্দিষ্ট কিছু পণ্যের বিরুদ্ধে ঢাকা একই রকম পদক্ষেপ নিয়েছিল। তার জবাবে ভারত সরকার এ ব্যবস্থা নিয়েছে। এ খবর নিশ্চিত করেছে বার্তা সংস্থা পিটিআই। 

ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য বিষয়ক ডিরেক্টর জেনারেল এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, ভারতের মধ্য দিয়ে ট্রানজিট সুবিধা পায় এমন বাংলাদেশি পণ্যের ক্ষেত্রে এই বন্দরগুলোর বিধিনিষেধ প্রযোজ্য হবে না। তবে যেসব পণ্য নেপাল ও ভুটান যায় তার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। মন্ত্রণালয় বলেছে, স্থল বন্দরে এই বিধিনিষেধ প্রয়োগ করা হবে সুনির্দিষ্ট কিছু পণ্যের ওপর। এর মধ্যে আছে তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের আইটেম প্রভৃতি। বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক ভারতের কোনো স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি করতে দেয়া হবে না বলে এই আদেশে বলা হয়েছে। তবে এসব আমদানি করা যাবে শুধু নবসেনা এবং কলকাতা বন্দর ব্যবহার করে।

নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকবে ফলের স্বাদযুক্ত এবং কার্বোনেটেড পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য (বেকড পণ্য, স্ন্যাকস, চিপস, কনফেকশনারি), কটন ও কটনজাত বর্জ্য, প্লাস্টিক ও পিভিসি পণ্য, ডাই, প্লাস্টিসাইজার ও গ্রানিউল, কাঠের ফার্নিচার। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয় প্রতিবেশী এই দেশটি থেকে কোনো স্থল কাস্টম স্টেশন ব্যবহার করে ভারতে শিপমেন্ট অনুমোদিত নয়।

এই সঙ্গে আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুর ও মিজোরামের ইন্টিগ্রেটেড চেক পোস্ট ব্যবহার করা যাবে না। পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংরাবান্ধ ও ফুলবাড়ি স্থলবন্দরও ব্যবহার করা যাবে না। তবে মাছ, এলপিজি, ভোজ্য তেল এবং পাথর আমদানির ক্ষেত্রে এই স্থল বন্দর নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না। এই নির্দেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে বলা হয়েছে। এর আগে মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপে পণ্য বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা গত ৯ই এপ্রিল প্রত্যাহার করে ভারত। একই সঙ্গে নেপাল ও ভুটান বাদে অন্য দেশগুলোর জন্য তা প্রযোজ্য বলে বলা হয়।

 

সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চীন সফরে গিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলো নিয়ে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, এ অঞ্চল ভূমি বেষ্টিত। বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে ছাড়া তাদের সমুদ্রে যাওয়ার পথ নেই। এর পর পরই ভারত সরকজার ওই ঘোষণা দেয়। ভারতে বাংলাদেশ যে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা পায় তা প্রত্যাহার করার জন্য এর আগেই সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ভারতীয় রপ্তানিকারকরা।

 

পিটিআই আরও লিখেছে, ভারতের বস্ত্র খাতের জন্য বড় এক প্রতিযোগী বাংলাদেশ। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ২০২৩-২৪ সময়ে বাণিজ্য হয়েছে ১২.৯ বিলিয়ন ডলার।

সূত্র মতে, কোনো রকম বিধিনিষেধ ছাড়াই ভারত তার সব স্থলবন্দর, ইন্টিগ্রেডেট কাস্টমস চেকপেস্ট এবং সমুদ্র বন্দরকে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানিতে অনুমোদন দিয়েছিল। কিন্তু ভারতের রপ্তানিতে বাংলাদেশ বন্দর ব্যবহারে, বিশেষ করে স্থল বন্দর এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট ব্যবহারে বিধিনিষেধ আরোপ করে। এ বছর ১৩ই এপ্রিল ভারত থেকে স্থলবন্দর দিয়ে সুতা রপ্তানি বন্ধ করে দেয়া হয়। ভারতের শিপমেন্ট প্রবেশের সময় কঠোর ইন্সপেকশনের মুখে পড়তে হচ্ছিল। একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ১৫ই এপ্রিল থেকে বেনাপোল ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট দিয়ে ভারত থেকে চাল রপ্তানিও অনুমোদন দেয়া হচ্ছে না। বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ স্থলবন্দরে বিধিনিষেধ আরোপ করার কারণে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো বাংলাদেশের বাজার হারাচ্ছে। ওই অঞ্চলে উৎপাদিত পণ্য বিক্রি হয় বাংলাদেশে। রিপোর্টে বলা হয়, পক্ষান্তরে প্রতিবেশী এই দেশটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বাজারে প্রবেশের মুক্ত সুযোগ ভোগ করছে। ওই কর্মকর্তা বলেছেন, যেসব পণ্যের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ দেয়া হয়েছে তা নিয়মিতভাবে রিভিউ করা হবে। সম্প্রতি স্থলবন্দর ব্যবহার করে ভারত থেকে সুতা আমদানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করে বাংলাদেশ। তবে শুধু সমুদ্রবন্দর ব্যবহারে এর অনুমতি আছে। উল্লেখ্য, ভারতে প্রতি বছর কমপক্ষে ৭০ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদেশ।

 

 

সুত্র:মানবজমিন

নিউজটি শেয়ার করুন

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

বাংলাদেশি পন্য আমদানীতে ভারতীয় স্থলবন্দরে নিষেধাজ্ঞা

আপডেট সময়ঃ ০১:৩৮:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫

তৈরি পোশাকসহ বাংলাদেশি বিভিন্ন পণ্য স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি নিষিদ্ধ করেছে ভারত সরকার। গত মাসে ভারতের সুনির্দিষ্ট কিছু পণ্যের বিরুদ্ধে ঢাকা একই রকম পদক্ষেপ নিয়েছিল। তার জবাবে ভারত সরকার এ ব্যবস্থা নিয়েছে। এ খবর নিশ্চিত করেছে বার্তা সংস্থা পিটিআই। 

ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য বিষয়ক ডিরেক্টর জেনারেল এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, ভারতের মধ্য দিয়ে ট্রানজিট সুবিধা পায় এমন বাংলাদেশি পণ্যের ক্ষেত্রে এই বন্দরগুলোর বিধিনিষেধ প্রযোজ্য হবে না। তবে যেসব পণ্য নেপাল ও ভুটান যায় তার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। মন্ত্রণালয় বলেছে, স্থল বন্দরে এই বিধিনিষেধ প্রয়োগ করা হবে সুনির্দিষ্ট কিছু পণ্যের ওপর। এর মধ্যে আছে তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের আইটেম প্রভৃতি। বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক ভারতের কোনো স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি করতে দেয়া হবে না বলে এই আদেশে বলা হয়েছে। তবে এসব আমদানি করা যাবে শুধু নবসেনা এবং কলকাতা বন্দর ব্যবহার করে।

নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকবে ফলের স্বাদযুক্ত এবং কার্বোনেটেড পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য (বেকড পণ্য, স্ন্যাকস, চিপস, কনফেকশনারি), কটন ও কটনজাত বর্জ্য, প্লাস্টিক ও পিভিসি পণ্য, ডাই, প্লাস্টিসাইজার ও গ্রানিউল, কাঠের ফার্নিচার। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয় প্রতিবেশী এই দেশটি থেকে কোনো স্থল কাস্টম স্টেশন ব্যবহার করে ভারতে শিপমেন্ট অনুমোদিত নয়।

এই সঙ্গে আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুর ও মিজোরামের ইন্টিগ্রেটেড চেক পোস্ট ব্যবহার করা যাবে না। পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংরাবান্ধ ও ফুলবাড়ি স্থলবন্দরও ব্যবহার করা যাবে না। তবে মাছ, এলপিজি, ভোজ্য তেল এবং পাথর আমদানির ক্ষেত্রে এই স্থল বন্দর নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না। এই নির্দেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে বলা হয়েছে। এর আগে মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপে পণ্য বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা গত ৯ই এপ্রিল প্রত্যাহার করে ভারত। একই সঙ্গে নেপাল ও ভুটান বাদে অন্য দেশগুলোর জন্য তা প্রযোজ্য বলে বলা হয়।

 

সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চীন সফরে গিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলো নিয়ে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, এ অঞ্চল ভূমি বেষ্টিত। বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে ছাড়া তাদের সমুদ্রে যাওয়ার পথ নেই। এর পর পরই ভারত সরকজার ওই ঘোষণা দেয়। ভারতে বাংলাদেশ যে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা পায় তা প্রত্যাহার করার জন্য এর আগেই সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ভারতীয় রপ্তানিকারকরা।

 

পিটিআই আরও লিখেছে, ভারতের বস্ত্র খাতের জন্য বড় এক প্রতিযোগী বাংলাদেশ। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ২০২৩-২৪ সময়ে বাণিজ্য হয়েছে ১২.৯ বিলিয়ন ডলার।

সূত্র মতে, কোনো রকম বিধিনিষেধ ছাড়াই ভারত তার সব স্থলবন্দর, ইন্টিগ্রেডেট কাস্টমস চেকপেস্ট এবং সমুদ্র বন্দরকে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানিতে অনুমোদন দিয়েছিল। কিন্তু ভারতের রপ্তানিতে বাংলাদেশ বন্দর ব্যবহারে, বিশেষ করে স্থল বন্দর এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট ব্যবহারে বিধিনিষেধ আরোপ করে। এ বছর ১৩ই এপ্রিল ভারত থেকে স্থলবন্দর দিয়ে সুতা রপ্তানি বন্ধ করে দেয়া হয়। ভারতের শিপমেন্ট প্রবেশের সময় কঠোর ইন্সপেকশনের মুখে পড়তে হচ্ছিল। একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ১৫ই এপ্রিল থেকে বেনাপোল ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট দিয়ে ভারত থেকে চাল রপ্তানিও অনুমোদন দেয়া হচ্ছে না। বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ স্থলবন্দরে বিধিনিষেধ আরোপ করার কারণে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো বাংলাদেশের বাজার হারাচ্ছে। ওই অঞ্চলে উৎপাদিত পণ্য বিক্রি হয় বাংলাদেশে। রিপোর্টে বলা হয়, পক্ষান্তরে প্রতিবেশী এই দেশটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বাজারে প্রবেশের মুক্ত সুযোগ ভোগ করছে। ওই কর্মকর্তা বলেছেন, যেসব পণ্যের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ দেয়া হয়েছে তা নিয়মিতভাবে রিভিউ করা হবে। সম্প্রতি স্থলবন্দর ব্যবহার করে ভারত থেকে সুতা আমদানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করে বাংলাদেশ। তবে শুধু সমুদ্রবন্দর ব্যবহারে এর অনুমতি আছে। উল্লেখ্য, ভারতে প্রতি বছর কমপক্ষে ৭০ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদেশ।

 

 

সুত্র:মানবজমিন